বাংলাদেশে পশুপাখি ও উৎপাদিত দ্রব্যের পরিসংখ্যান

আমাদের আজকের আর্টিকেলটি বাংলাদেশে পশুপাখি ও উৎপাদিত দ্রব্যের পরিসংখ্যান সম্পর্কে – যা বাউবি বিএজএড ২৩০৪ গৃহপালিত পশুপালন ইউনিট-১ এর অন্তর্ভুক্ত |

বাংলাদেশে পশুপাখি ও উৎপাদিত দ্রব্যের পরিসংখ্যান

অতীতে বাংলাদেশে প্রায় সব বাড়িতেই গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল পালন করা হতো। এদের মধ্যে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল ছাড়া অন্য কোনো পশুর জাতই উন্নত নয়। সনাতন পদ্ধতিতে দেশের মানুষ এসব পশু পালন করতো। তথাপি তখনকার দিনে এভাবেই বাংলাদেশের মানুষের দুধ ও মাংসের চাহিদা মেটানো সম্ভব ছিল। এর প্রধান কারণ-

  • গৃহপালিত পশুর সংখ্যা কম থাকায় পর্যাপ্ত পশু খাদ্যের যোগান সম্ভব ছিল।
  • লোকসংখ্যা কম থাকায় চাহিদা কম ছিল এবং পর্যাপ্ত চারণভূমি পাওয়া যেত।
  • শস্য উৎপাদন ব্যবস্থায় গৃহপালিত পশুর জন্য ঘাস উৎপাদিত হতো।
  • পর্যাপ্ত পশু খাদ্য সরবরাহের জন্য পশু থেকে বেশি উৎপাদন পাওয়া যেত।

 

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

বর্তমানে বাংলাদেশের সে অবস্থা আর নেই। স্ফীত জনসংখ্যার আমিষের চাহিদা মেটানো দুরূহ হয়ে পড়েছে। দেশী জাতের পশুর মাংস ও দুধ দিয়ে বর্তমান চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে পশুপালনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োগ প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার বেশ কয়েক বছর আগে হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ান ও জার্সি জাতের দুধ উৎপাদনকারী গরু এনে এদেশে দেশী গরুর জাত উন্নয়নের চেষ্টা করছেন।

বাংলাদেশে গৃহপালিত পশুর জাত উন্নয়নের লক্ষ্যে কৃত্রিম প্রজননের জন্য মোট ২২টি কেন্দ্র এবং ৪২৫টি উপকেন্দ্র আছে। আমাদের দেশের পশু বাছাই প্রক্রিয়ায় উন্নয়ন ঘটালে এদের উৎপাদন ক্ষমতাও লাভজনক হারে বাড়ানো সম্ভব হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতিবছর ১.৫০ মিলিয়ন কর্মক্ষম লোক দেশের অর্থনীতিতে যোগ হচ্ছে। এদের জন্য কাজ দরকার। দেশের আবাদি জমির পরিমাণ মাথাপিছু মাত্র ০.২১ একর। এর সম্প্রসারণও সম্ভব নয়। এজন্য দরকার অল্প জায়গায় অধিক উৎপাদন। এ লক্ষ্যে দেশের পশুসম্পদ বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে।

দেশের পশুসম্পদ উন্নয়নের সম্ভাবনা গত বছরগুলোতে প্রমাণিত হয়েছে। দশ বছর আগে যেখানে দেশের কোথাও বেসরকারী পর্যায়ে ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি খামারও ছিল না, বর্তমানে দেশে বেসরকারী পর্যায়ে ব্যক্তিমালিকানাধীন ৩০ হাজার দুগ্ধ খামার ও ৬২ হাজার মুরগি খামার গড়ে ওঠেছে। পাশাপাশি এসব খামার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানে বহু লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।

পশুসম্পদ উন্নয়নের ফলে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার পূর্বের শতকরা ৩.০ ভাগ থেকে বেড়ে ১৯৯৫-এ ৯.০ ভাগ-এ দাঁড়িয়েছে। গুড়ো দুধ আমদানির পরিমাণ বছরে পূর্বের ৪৫০ কোটি টাকা থেকে কমে ১৪০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সরকার সুষ্ঠু পরিকল্পনা, উন্নত বাজারজাতকরণ ব্যবস্থা ও গবেষণার মাধ্যমে উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে পারলে এদেশের পশুসম্পদ অদূর ভবিষ্যতে আরও সম্ভাবনাময় হয়ে ওঠবে বলে আশা করা যায়।

বাংলাদেশের পশুসম্পদ ও উপজাত দ্রব্যের পরিসংখ্যান

বাংলাদেশের পশুসম্পদ ও এদের থেকে উৎপাদিত বিভিন্ন উপজাত দ্রব্য এখানে সারণির মাধ্যমে দেখানো হয়েছে।

সারণি ১ : গৃহপালিত পশুর পরিসংখ্যান (মিলিয়ন)

 

বাংলাদেশে পশুপাখি ও উৎপাদিত দ্রব্যের পরিসংখ্যান

 

সারণি ২ : দেশে দুধ, মাংস ও ডিমের বর্তমান উৎপাদন ও প্রয়োজনীয়তার উপাত্ত (১৯৯৯-২০০০ সালের)

 

বাংলাদেশে পশুপাখি ও উৎপাদিত দ্রব্যের পরিসংখ্যান

 

সারণি ৩ : চাষের জন্য প্রয়োজনীয় ও প্রাপ্ত পশুশক্তি এবং প্রতিবছর উৎপাদিত গোবরের একটি হিসাব

 

বাংলাদেশে পশুপাখি ও উৎপাদিত দ্রব্যের পরিসংখ্যান

 

সারণি ৪ : পশুসম্পদ থেকে বার্ষিক উৎপাদিত, ব্যবহৃত ও রপ্তানিকৃত চামড়ার হিসাব

 

বাংলাদেশে পশুপাখি ও উৎপাদিত দ্রব্যের পরিসংখ্যান

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment