লিটারের প্রকারভেদ ও ব্যবস্থাপনা | পোল্ট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং

লিটারের প্রকারভেদ ও ব্যবস্থাপনা আজকের আলোচনার বিষয়। “লিটারের প্রকারভেদ ও ব্যবস্থাপনা [Litter types & management]” ক্লাসটি পোলট্রি রেয়ারিং এন্ড ফার্মিং ১ [Poultry Rearing & Farming 1] কোর্সের পাঠ্য। “লিটারের প্রকারভেদ ও ব্যবস্থাপনা [Litter types & management]” ক্লাসটি নবম শ্রেণীর ৫ম অধ্যায়ের পাঠ। নিয়মিত ক্লাস পেতে গুরুকুল কৃষি, মৎস্য ও পশুসম্পদ গুরুকুলে যুক্ত থাকুন।

 

লিটারের প্রকারভেদ ও ব্যবস্থাপনা

পোল্ট্রি মুরগি পালনে লিটারের ভূমিকা খুবই গুরত্বপূর্ণ। আবদ্ধ অবস্থায় পোল্ট্রি পালনের ক্ষেত্রে লিটার পদ্ধতিতে মুরগির বিছানা হিসাবে লিটার ব্যবহার করা হয়। পোল্ট্রি লিটার অন্যান্য কাজেও ব্যবহার করা যায়। লিটার এক দিকে যেমন পোল্ট্রি উৎপাদনে সহায়তা করে ঠিক তেমনি সঠিকভাবে লিটারের যত্ন না নিলে এ থেকে বিভিন্ন রােগের সৃষ্টি হতে পারে। তাই লিটার সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা প্রয়ােজন।

 

লিটারের প্রকারভেদ

 

লিটার কি?

পশুপাখির বিছানাকেই ইংরেজিতে লিটার (Liter) বলে অর্থাৎ লিটার বলতে পোল্ট্রির ঘরের শয্যা হিসেবে ব্যবহৃত নানাবিধ বস্তুকেই বােঝায়। এক কথায় বাসস্থান আরামদায়ক করার জন্য মুরগির ঘরে যে বিছানা ব্যবহার করা হয় তাকে লিটার বলে।

যে সকল বস্তু লিটার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ঃ

ব্যবহৃত উপকরণের ভিত্তিতে লিটারের শ্রেণিবিন্যাস

মুরগির ঘরে লিটার বা বিছানা হিসেবে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন দ্রব্যাদি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ব্যবহৃত দ্রব্যের নাম অনুযায়ী লিটারকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। যথা

  • তুষের লিটার।
  • কাঠের গুঁড়ার লিটার
  • খড়ের ছােট টুকরার লিটার
  • আখের ছােবড়ার লিটার।
  • বালির লিটার।
  • নারিকেলের ছােবড়ার লিটার

 

মুরগির ঘরে লিটার স্থাপনের কৌশল :

  • লেয়ার ঘরে ওঠানাের ১ সপ্তাহ পূর্বে লিটার দ্রব্য স্থাপন করতে হবে।
  • লিটার বিছানাের পূর্বে ভালােভাবে ঘরের মেঝে শুকাতে হবে।
  • লিটারের দ্রব্য অবশ্যই নরম ও আরামদায়ক হবে।
  • লিটার ভেজা থাকলে রােদে শুকিয়ে ১০ % আর্দ্রতায় আনতে হবে। কারণ বেশি আর্দ্র হলে অ্যামােনিয়া গ্যাস উৎপন্ন হয়।
  • লিটার হাতের মুঠোর মধ্যে নিয়ে খুব জোরে চাপ দিলে যদি জমাট না বাঁধে বা ঝরে না যায় তাহলে লিটারের অবস্থা ভালাে হিসাবে ধরে নিতে হবে।
  • শুকনা লিটার ব্যবহারের পূর্বে জীবাণুমুক্ত করে ঘরের মেঝেতে লিটার বিছিয়ে রাখতে হবে।
  • বিছানা বা লিটার যাতে বৃষ্টির ছাপে ভিজে না যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে।

 

মুরগির ঘরে লিটার ব্যবস্থাপনা:

  • লিটার যাতে মলমূত্রাদি বা খাবার পানির মাধ্যমে ভিজে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
  • লিটারের আর্দ্রতা বৃদ্ধির ফলে ছত্রাক যাতে জন্মাতে না পারে সেজন্য লিটার আচড়া ভালােভাবে ওলট পালট করে দিতে হবে।

দুই মাস পর লিটারের কার্যকারিতা শুরু হয়। এ সময়ের লিটারকে বিল্টআপ লিটার বলে। দুই মাস পর থেকে মুরগি নিজেরাই লিটার উল্টেপাল্টে নেয় বলে এই সময় মাসে একবার পরিচর্যা করতে হয়।

দুই মাস পর লিটারের মধ্যে প্রতি ১০০ মুরগির জন্য ২২৫ গ্রাম কাঁকর ছড়িয়ে দিতে হয়। আর্দ্রতা কম থাকলে পানি স্প্রে করতে হবে। লিটার ভিজে গেলে এর আর্দ্রতা কমানাের জন্য ঘরের মধ্যে বাতাসের প্রবাহ বাড়াতে হয়। এতে কাজ না হলে পুরােনাে লিটারে সাথে নতুন শুকনা লিটার মেশাতে হয় বা ভিজা লিটার ফেলে দিয়ে নতুন লিটার দিতে হবে।

লিটারের আর্দ্রতা দূর করার জন্য মাঝে মাঝে সুপার ফসফেট প্রতি ১ ঘন মিটারের জন্য ২২৫ গ্রাম হিসাবে মেশাতে হবে। লিটার কেক হলে ভেঙে দিতে হবে।

পুরু বিছানা যাতে জমাট না বাঁধে সে জন্য তাতে শুষ্ক চুন (১০ বর্গ মিটারে ৭-১০ কেজি চুন) সমানভাবে ছড়িয়ে দিয়ে বিছানা নেড়ে মিশিয়ে দিতে হবে।

ব্যবহার শেষে লিটার পুনরায় ব্যবহার করতে চাইলে প্রতি ১ ঘন মিটার লিটারে ১ কেজি চুনের গুঁড়া মিশিয়ে ১ সপ্তাহ স্তুপ করে রাখলে পরিশুদ্ধ হয় এবং পরবর্তীতে এই লিটার ব্যবহার করা যায়।

মুরগির পালে যদি রােগ-ব্যাধি না থাকে তবে তাদের ব্যবহৃত লিটার পুনরায় ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে পুরােনাে লিটার ব্যবহার না করাই উত্তম। সংক্রামক রােগে আক্রান্ত পালের ব্যবহৃত লিটার পুড়িয়ে ফেলতে হয়।

 

লিটারের প্রকারভেদ ও ব্যবস্থাপনা লিটারের প্রকারভেদ ও ব্যবস্থাপনা | পোল্ট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং

 

লিটারের প্রকারভেদ ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিস্তারিত ঃ

Leave a Comment