লেয়ারের খাদ্য ব্যবস্থাপনা আজকের আলোচনার বিষয়। “লেয়ারের খাদ্য ব্যবস্থাপনা [ Layer food-management ]” ক্লাসটি পোলট্রি রেয়ারিং এন্ড ফার্মিং ১ [Poultry Rearing & Farming 1] কোর্সের পাঠ্য। “লেয়ারের খাদ্য ব্যবস্থাপনা [ Layer food-management ]” ক্লাসটি দশম শ্রেণীর [ Class 10 ] ৮ম অধ্যায়ের [ Chapter 8 ] পাঠ। নিয়মিত ক্লাস পেতে গুরুকুল কৃষি, মৎস্য ও পশুসম্পদ গুরুকুলে যুক্ত থাকুন।
লেয়ারের খাদ্য ব্যবস্থাপনা
লেয়ার মুরগির খাদ্য ব্যবস্থাপনা (Laver Chicken Feed Management)
মুরগির খাদ্য:
যে সমস্ত দ্রব্য আহানা হিসেবে মুরগির শরীরের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধি সাধন, উৎপাদন, প্রজনন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে তাকে খাদ্য বলা হয়। একটি মুরগির খামারে মোট খরচের শতকরা ৬৫-৭০ ভাগই খাদ্য বাবদ খরচ হয়। লেয়ারের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন খাদ্য উপকরণের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদান বিভিন্ন মাত্রায় উপস্থিত থাকে। খাদ্য উপকরণের মধ্যে যে উপাদান বেশি মাত্রায় বিদ্যমান থাকে তাকে সেই উপাদান যুক্ত খাদ্য বলা হয়। চালের কুঁড়ায় শক্তি বেশি থাকে বিধায় তা শর্করা জাতীয় খাদ্য।
লেয়ারের পুষ্টি উপাদান সমূহের নাম(Name of laver nutrient ingredients):
খাদ্য উপকরণে পুষ্টি উপাদানের আধিক্যের ভিত্তিতে খাদ্য উপাদান মোট ৬ ভাগে ভাগ করা যায় । যেমন:
(১) শর্করা জাতীয় উপাদান
(২) আমিষ জাতীয় উপাদান
(৩) চর্বি বা তৈল জাতীয় উপাদান
(৪) খনিজ পদার্থ জাতীয় উপাদান
(৫) ভিটামিন জাতীয় উপাদান
(৬) পানি
হাঁস-মুরগির খাদ্যের ৭৫-৮০% ই শর্করা জাতীয় খাদ্য। সাধারণত যে দ্রব্যে ২০% এর কম আমিষ থাকে তাদের শর্করা জাতীয় খাদ্য হিসেব গণ্য করা হয়। প্রায় সব ধরনের দানা শস্যই শর্করা প্রধান খাদ্য।
শর্করা জাতীয় উপাদান আবার দুইভাগে বিভক্ত, যেমন-
(ক) দানা জাতীয় ও
(খ) আঁশ জাতীয়

চাল: চাল এবং চালের উপজাত দ্রব্যাদি মুরগির জন্য সহজপাচ্য ও সহজলভ্য শর্করা জাতীয় খাবার। খুদ বা ভাঙা চালের মূল্য তুলনামুলকভাবে কম। তাই বাচ্চা মুরগি ও ডিমপাড়া মুরগির জন্য খুদ ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়। খুদের মধ্যে আমিষ এবং ভিটামিন বি২ থাকে। খুদে ১০-১২% আমিষ, ১৩% চর্বি এবং গড়ে ১১-১২% আঁশ থাকে।
ভূট্টা: ভূট্টা সুস্বাদু ও সহজপাচ্য হওয়ায় মুরগি বেশ পছন্দ করে । মুরগির খাদ্য হিসেবে ভূট্টা খুবই জনপ্রিয় । হলুদ ভুট্টার মধ্যে ভিটামিন-এ এর পরিমাণ অধিক থাকে। ভূট্টা ছোট ছোট করে ভেঁঙে বা গুঁড়ো করে ও হাঁস-মুরগির খাবার হিসেবে ব্যবহার করা যায় ।
গমঃ গমকে অনেকে হাঁস-মুরগির আদর্শ খাদ্য বলে মনে করেন। গম সুস্বাদু এবং সহজপাচ্য। তদুপরি অন্যান্য দানাদার খাদ্যের তুলনায় আমিষের পরিমাণ অধিক। গমে সন্তোষজনক পরিমাণ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স থাকে । গম ভাঙা ও গমের ভুষি হাঁস-মুরগির খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
যবঃ অন্যান্য দানা শস্যের সাথে মিশিয়ে যবকে মুরগির খাদ্য হিসেবে দেয়া যায়। যবে আঁশের পরিমাণ অধিক। অতিরিক্ত যব খাওয়ালে মুরগির চর্বি পরিমাণ বেড়ে যায় ।
শাকসবজিঃ বেগুন, মিষ্টি আলু, লাউ, কুমড়া এবং অন্যান্য সবজির খোসা ও অন্যান্য পরিত্যক্ত অংশ সিদ্ধ করে মুরগিকে খেতে দেয়া যায়। এসব খাদ্য ভিটামিন সমৃদ্ধ। বাঁধাকপি, ফুলকপি, গাজর, বীট, পালং শাক, পুঁইশাক, নটেশাক, মূলা প্রভৃতির পাতা কুঁচি কুঁচি করে কেটেও মুরগিকে খেতে দেয়া যায়। এসব খাদ্য ক্যারোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ ৷
চালের মিহি কুঁড়া: চালের কুঁড়া মুরগির একটি উৎকৃষ্ট খাবার। এতে চালের গুঁড়া থাকার ফলে শর্করার পরিমাণ অধিক। কুঁড়া সহজপাচ্য। কুঁড়া খাওয়ানোর আগে দেখে নিতে হবে তা ভেজা বা ছত্রাক আক্রান্ত কিনা ।
গমের ভুষি: গমের দানার মোটা অংশই ব্যবহৃত হয় ভুষি হিসেবে। গমের ভুষির মধ্যে গড়ে ১৬% আমিষ থাকে। গম ও ভূট্টা তুলনায় গমের ভুষির আমিষ উন্নতমানের। এতে নিয়াসিন ও থায়ামিনের পরিমাণ অধিক। ডিমপাড়া মুরগির ক্ষেত্রে ১৫% গমের ভুষি খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায় ।
আমিষ জাতীয় উপাদান দুইভাগে বিভক্ত, যেমন –
(ক) প্রাণিজ আমিষ
(খ) উদ্ভিজ্জ আমিষ

লেয়ারের খাদ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিস্তারিত ঃ
