Site icon Livestock Gurukul [ লাইভস্টক গুরুকুল ] GOLN

গরুমহিষকে বিভিন্নভাবে আটকানো পদ্ধতি

গরুমহিষকে বিভিন্নভাবে আটকানো পদ্ধতি

আমাদের আজকের আর্টিকেলটি গরুমহিষকে বিভিন্নভাবে আটকানো পদ্ধতি সম্পর্কে – যা বাউবি বিএজএড ২৩০৪ গৃহপালিত পশুপালন ইউনিট – ৮ এর অন্তর্ভুক্ত |

গরুমহিষকে বিভিন্নভাবে আটকানো পদ্ধতি

 

গরুমহিষকে বিভিন্নভাবে আটকানো পদ্ধতি

 

গরু ও মহিষ আমাদের দেশে ভারবাহী পশু হিসেবে পরিচিত। প্রাচীনকালে পশুরা বনেজঙ্গলে চরে বেড়াতো। সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে আবির্ভাবের পর থেকেই মানুষ নিজের প্রয়োজনে গরুমহিষকে গৃহে লালনপালন করার পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। কিন্তু তারপরেও পশুদের মধ্যে পুরনো জংলী অভ্যাস ও আচরণগুলো বিদ্যামান।

এসব আচরণকে আমরা পশুদের বদঅভ্যাস বা ভাইস (vice) বলে থাকি । তা সত্ত্বেও গৃহে লালনপালন করার জন্যই পশুকে ধরতে হয়, তার কাছে যেতে হয় এবং চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করতে হয়। মানুষের বিভিন্ন কাজে পশুকে ব্যবহার করা হয়। এসব কারণেই পশুকে নিয়ন্ত্রণ করা বা আটকানোর বিভিন্ন পদ্ধতিগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পশু আটকানোর কতকগুলো পদ্ধতি বা কলাকৌশল এখানে আলোচনা করা হয়েছে।

আড়পাতা পদ্ধতি (Stanchion / Chute method )

পশুপালনকারী বা চিকিৎসকের জন্য এ পদ্ধতিতে গরুমহিষকে আড়পাতা বা ধরা সম্পূর্ণ নিরাপদ। বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের দেশে গরুমহিষের খামারগুলোতে এই পদ্ধতিতে এদেরকে আটকানো হয়। একটি নির্দিষ্ট সুবিধাজনক স্থানে আড়পাতা হয়। এই আড় লোহা, কাঠ বা বাঁশের তৈরি হতে পারে। প্রধানত পায়ুপথ ও যোনিপথ পরীক্ষা করার সুবিধার জন্য শূটের শেষ প্রান্ত বা পেছন দিকে যথেষ্ট জায়গা থাকে।

 

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

পশুকে শোয়ানো

রুগ্ন পশুর পরীক্ষা বা অস্ত্রোপচার সুষ্ঠুভাবে করা এবং জবাইয়ের জন্য পশুকে মাটিতে শুইয়ে নিয়ন্ত্রণ করা উত্তম পদ্ধতি। তবে, গবাদিপশুকে মাটিতে ফেলার পূর্বে অবশ্যই স্থানটি দেখে নিতে হবে যাতে পশু মারাত্বক কোনো আঘাত না পায়। পশুদেহের যে কোনো পার্শ্ব মাটির দিকে ফেলা যায়। তবে, সাধারণত বাম দিকে ফেলা শ্রেয়। সাধারণত দঁড়ির সাহায্যে গরুমহিষকে বেঁধে মাটিতে শোয়ানো হয় । দঁড়ির সাহায্যে বেঁধে শোয়ানোর বেশ ক’টি পদ্ধতি রয়েছে।

একটি পদ্ধতিতে একটি শক্ত লম্বা রশির এক প্রান্ত পশুর শিংয়ের গোড়ায় বেঁধে তিনবার গেরো দিয়ে শরীরে বেষ্টনি পড়ানো হয় এবং রশির অপর প্রান্ত পেছন থেকে দৃঢ়ভাবে টেনে ধরলে পশু আপনা আপনি পেছনের দিকে নুয়ে পড়ে। রশির গেরো গরুমহিষকে মেরুদন্ড বরাবর দিতে হয়। এতে পশুর কিছু ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সে কারণে যত্নসহকারে এটি করতে হয়। অন্য একটি পদ্ধতিতে গরুর পেটের মাঝামাঝি মেরুদন্ড বরাবর একটি শক্ত রশি পরানো হয়। রশির এক প্রান্ত সামনের পায়ের চারদিকে এবং অপর প্রান্ত পেছনের পায়ের চারদিকে ঘিরে ধরতে হয়।

অতঃপর দু’দিক থেকে পিঠ বরাবর রশি টেনে ধরলে পশু হঠাৎ করে একপাশে শুয়ে পড়ে। এতে গরুমহিষের ক্ষতি হতে পারে। অতএব এদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। এছাড়াও কম ওজনের পশুকে পেছনের দু’পায়ে বেঁধে হ্যাচকা টানে মাটিতে ফেলা যায় ।

তবে, এক্ষেত্রে যে স্থানে পশুকে ফেলা হবে তা যেন নরম হয়। গাভী অন্তঃসত্ত্বা হলে তাকে প্রথম পদ্ধতিতে শোয়ানো যায়। তবে, এই অবস্থায় গাভীকে সব সময় বাম দিকে শুইয়ে দিতে হয়। গোশালায় সার্বক্ষনিক বেঁধে রেখে গরুমহিষ লালনপালন করার যে কৌশল অবলম্বন করা হয় তাতে এদেরকে উপরোক্ত কোনো পদ্ধতিতেই আটকানো হয় না। যে জায়গায় গরু বা মহিষটির অবস্থান সেখানেই আড়পাতা পন্থায় তাকে সব সময় থাকতে হয়।

 

গরুমহিষকে বিভিন্নভাবে আটকানো পদ্ধতি

 

অসুস্থ হলে বা অন্য কোনো প্রয়োজনে যে শিকল পশুর গলায় সব সময় লাগানো থাকে তার একাংশ টেনে নিয়ে পশুর নাকে লাগানো আংটার (nose ring) সঙ্গে একটি প্যাঁচ দিয়ে উপরে টেনে শিংয়ের সঙ্গে আরেকটি প্যাঁচ দিয়ে আটকে দিলেই পশু আর তেমন নড়াচড়া করতে পারে না। এই পদ্ধতি ইউরোপের বড় খামারগুলোতে চালু আছে। এই কৌশল কিছুটা অসহায়ত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেও এভাবেই ওসব দেশে পশু আটকানো হয়। চিকিৎসক ও সেবা প্রদানকারী ব্যক্তি একজন সাহায্যকারীর সাহায্যে একাজ করে থাকেন।

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version